সাইদ রিপন: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যেই সব ঋণ গ্রহিতারা ব্যাংকের টাকা নিয়মিত পরিশোধ করে তাদের সুদহার কমে ৭ শতাংশ হবে। এসব ঋণ গ্রহিতারা এতোদিন ১০ থেকে ১২ শতাংশ সুদে ঋণ পরিশোধ করতো। অন্যদিকে অসাধু ঋণ গ্রহিতাদের পেনাল্টি দেয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত চলতি বছরের মে মাস থেকে কার্যকর হবে।
সোমবার (২৫ মার্চ) শেরে বাংলানগরে অর্থমন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, এনবিআর চেয়ারম্যান ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডাবল ডিজিট থেকে কিভাবে সিঙ্গেল ডিজেটে সুদ হার নামিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে বৈঠক করেন সংশ্লিষ্টরা।
বৈঠক শেষে ভালো ও অসাধু ঋণ গ্রহিতার সঙ্গা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি ১০ বার ব্যাংক থেকে টাকা নিলাম অথচ দিলাম না আমি কি ভালো? আমি দুইবার টাকা নিলাম দিলাম না আমি ভালো? অথবা ১০বার এক্সপোর্ট করলাম একবার টাকা ব্যাংকে ঢুকালাম না তারা কি ভালো? এরা অসাধু এদের খুঁজে বের করে প্যানাল্টির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন,তবে যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ভালো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন এবং নিয়মিত টাকা পরিশোধ করেন তাদের জন্য সুদ কমানো হবে। ছোট ঋণ গ্রহিতা ও বড় ঋণ গ্রহিতারা ২ ঋণ পরিশোধ করবেন, বাকি ব্যালেন্সে ৭ শতাংশ সুদ হবে। এসব ঋণে হয়তো ১২ অথবা ১৩ শতাংশ সুদ ছিলো। কিন্তু আরা এতো সুদ দিতে হবে না সাত শতাংশ সুদ দিলেই হবে।’
তিনি আরো বলেন, আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রী(আবুল মাল আবদুল মুহিত)এই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিতকায় আমরা বসেছিলাম। আমাদের ব্যাংকার লাগবে এর পাশাপাশি ঋণ গ্রহিতাদেরও লাগবে। ঋণ গ্রহিতাদের কোনো বিকল্প নাই। তারাই আমাদের দারিদ্র দূর করে এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। তাদের বাদ দিয়ে চলার কোনো উপায় নাই। তাই তাদের কিভাবে সুযোগ সুবিধা দেয়া যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ব্যবসা করলে সারা জীবন লাভ হবে না। ব্যবসায়ীরা অনেক কষ্ট করেন। কখনও তারা লোকসানের মুখে পড়েন। ব্যবসায়ীদের লাভ হলে সরকার খুশি হয়, কারণ সরকার ট্যাক্স পায়, দেশে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে যখন ব্যবসায়ীদের লোকসান হয় তখন সরকার থেকে তারা তেমন সুযোগ সুবিধা পায় না। আমরা এসব ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে চাই।
ঋণ গ্রহিতাদের প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, ঋণ গ্রহিতা দুই ধরণের আছে এক ভালো ঋণ গ্রহীতা দুই অসাধু ঋণ গ্রহিতা। ভালো ঋণ গ্রহিতাকে সুযোগ দেবো অসাধু ঋণ গ্রহিতাকে জরিমাণা করবো। ভালো ঋণ গ্রহিতাকে নানাভাবে সুযোগ সুবিধা দেবে। যারা ভালো ঋণ গ্রহিতা তাদের সুদ কমিয়ে দেবো। তাদের ঋণে সুদের হার হবে সাত শতাংশ। আমরা বার বার বলেছি ঋণে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসবো এটা দিয়ে শুরু করতে চায়। সবভালো ঋণ গ্রহিতা তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ সুদ ৭ শতাংশ। যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে নিয়মিতভাবে পরিশোধ করেছেন। যারা টাকা নিয়ে ব্যাংকে পরিশোধ করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু ফেল করেছেন। তাদেরও সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)এর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
