টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

সরেজমিনে জানা যায়, যমুনার পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী, নিকরাইল ও অলোয়া ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকার ১৫ হাজার বসতবাড়ি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন, বোনা আমন, আউশ,বীজতলা ও সবজি বাগান। ক্লাশ রুমে পানি প্রবেশ করায় ৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৬টি দাখিল মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেছে। স্থগিত করা হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা। এ ছাড়াও  প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নিমজ্জিত হচ্ছে ফসলি জমি।

এদিকে বন্যার পানিতে বসতবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ঘরের মধ্যে উচু বাঁশের মাচান পেতে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। হাজার হাজার মানুষ নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, অন্যের উচু জমি ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এদের অধিকাংশই রয়েছে খোলা আকাশের নিচে। অপরদিকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পৌছায়নি কোন সাহায্য।

এ ছাড়াও ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক ঝুঁকিতে রয়েছে। আর এ সড়ক ভেঙে গেলে উত্তর টাঙ্গাইলের চারটি উপজেলা নতুন করে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে।

গাবসারা ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের ফরিদা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ‘বানের পানিতে ঘরবাড়ি ডুইবা গেছে। বিপদের মইধ্যে আছি। কেউ খোজ নিতে আসে নাই। ভোটের সময় আইলেই আমগর দাম বাইড়া যায়। অহন আমগো কোন দাম নাই। ’

গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘আমার ইউনিয়ন পুরোটাই পানির নিচে। এতে অর্ধলক্ষ্য মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। অথচ সরকারিভাবে কোন সাহায্যই পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তরা। ’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উচু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে বন্যার্তরা আশ্রয় নিতে পারে। আটকে পড়াদের উদ্ধারে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনা খাবারের ব্যবস্থা রাখা আছে।