১০ হাজার দলীয় স্থাপনায় আগুন দেওয়া ও হামলা হয়েছে: নানক

নিউজ ডেস্ক

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়সহ সারা দেশে ১০ হাজারের মতো দলীয় স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকুও মুছে ফেলা হয়েছে।

বুধবার ( ৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের প্যাডে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি সারাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

অবৈধ পন্থায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারকে হটানো হয়েছে দাবি করে নানক বলেন, গত ৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি সুগভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে হটানো হয়েছে। এর পর সমগ্র বাংলাদেশে নিবির্চারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ভয় ও ত্রাসের রাজস্ব সৃষ্টি করা হয়।

পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শূন্য পর্যায়ে নামিয়ে এনে ইতিহাসের ভয়াবহতম সন্ত্রাসের বিস্তার ঘাটানো হয় এবং সেটাকে নৈতিক বৈধতা দেয় সন্ত্রাস ভিত্তিক রাজনৈতিক অপশক্তি। তাদের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের শিকার হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সনাতনী ধর্মবিলম্বী জনগোষ্ঠীসহ দেশের সাধারণ মানুষ। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারায় ও আহত হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করা হয়।

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশে যখন কোনো আইন ছিল না বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে জঙ্গিবাদ গোষ্ঠী আশ্রয় প্রশ্রয় বেড়ে ওঠা ডাকাত দল সারাদেশে পাড়ায় মহল্লায় ডাকাতির উৎসবে মেতেছিল। চুরি ডাকাতির মাধ্যমে রাতারাতি অগণিত মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। অবৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে সময় অনুযায়ী কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়নি। দেশে এত বড় বন্যা পরিস্থিতিতে যথাযথ কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

দেশের শিক্ষা কার্যক্রম বিষয় তিনি বলেন, এরই মধ্যে হয়ে গেল শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এইচএসসি পরীক্ষা। যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মানদন্ডে দাঁড়িয়ে একটি প্রজন্ম তার ভবিষ্যতের ছক আঁকবে সে প্রজন্মকে অটোপশের মাধ্যমে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কঠিনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে লেলিয়ে দিয়ে সারাদেশে শত শত শিক্ষক- শিক্ষিকাদের উপর যে পাশবিক ও অমানবিক বর্বরতা দেখানো হয়েছে তা ইতিমধ্যে বাঙালি জাতিকে একটি অসভ্য জনগোষ্ঠীতে পরিণত করেছে।

সহিসতায় জড়িতেদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, গত ৫ আগস্টের ঘটনার পরে একে একে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উপর আঘাত হানা হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম স্মৃতি মেহেরপুরের আম্রকানন মুজিব নগর যাদুঘর, জাতির পিতার ভাস্কর্য, প্রতিমূর্তি, জয়নুল আবেদীনের ভাস্কর্য ভাঙ্গার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ধরনের হীন অপচেষ্টা বাঙালির ঐতিহ্য ও চেতনার মূলে আঘাত। যা বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সকলকে ব্যথিত ও মর্মাহিত করেছে। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কমকাচের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরও তিন হত্যা মামলা
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় সরকার ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা করতে চায় বিএনপি