তালেবানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করবে জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানগোষ্ঠীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ক একটি প্রস্তাব উত্থাপন ও তার পক্ষে ভোট হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সৌদি আরবভিত্তিক দৈনিক আরব নিউজ।

বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ‘অর্থনৈতিক সংকটের ফলে আফগানিস্তানে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি লাঘবে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা পাঠানোর পাশাপাশি দেশটির রাজনৈতিক ও মানবাধিকার ইস্যুতেও কাজ করতে চায় জাতিসংঘ। এছাড়া জাতিসংঘ মনে করে, আফগানিস্তানের নারী, শিশু ও সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় বিশেষ মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।’

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৪টিই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে এবং একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে রাশিয়া।

বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটির কোথাও আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের নাম উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ, তালেবানগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক পুনস্থাপনের উদ্যোগ নিলেও দেশটির জাতীয় ক্ষমতা দখলকারী তালেবানগোষ্ঠীকে স্বীকৃতিদানের বিষয়টি এখনও বিবেচনায় নেই জাতিসংঘের।

আরব নিউজকে বিষয়টি খোলাসা করে জাতিসংঘের নরওয়ে প্রতিনিধি মোনা জুল বলেন, ‘এটি একটি নতুন প্রস্তাব এবং এখানে মূলত আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মিশন পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গতবছর ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর থেকে দেশটিতে সার্বিকভাবে যে বিপর্যয় শুরু হয়েছে, তা থেকে সাধারণ আফগানদের উদ্ধার ও আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনাই জাতিসংঘের লক্ষ্য।’

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবানগোষ্ঠী। তারপর থেকেই জাতিসংঘে এই দেশটির কোনো প্রতিনিধি কার্যত নেই। তালেবানগোষ্ঠী যদিও তাদের অন্যতম মুখপাত্র সোহেল শাহীনকে জাতিসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠাতে তদবির করছে, কিন্তু এখনও তার ফলাফল শূন্য।

তালেবানগোষ্ঠী ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই গোষ্ঠীকে বিশ্বের কোনো দেশ স্বীকৃতি দেয়নি। উপরন্তু, মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশ ব্যতীত অধিকাংশ রাষ্ট্র আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাস বন্ধ রেখেছে এখনও।

এদিকে, তালেবানগোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিদেশী সহায়তানির্ভর আফগানিস্তানে তীব্র হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক সংকট। দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছেন বলে এর আগে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।

মানবিক বিবেচনায় গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানে কয়েক দফায় অর্থ, খাদ্য ও ওষুধ পাঠিয়েছে জাতিসংঘ। তবে সেগুলো পাঠানো হয়েছে জাতিসংঘের শিশু অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের আফগানিস্তান শাখার ঠিকানায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতেলের দাম বেশি নিলে ব্যবস্থার ঘোষণা ব্যবসায়ীদের
পরবর্তী নিবন্ধশিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর