নির্বাচন কখন কিভাবে হবে এ সিদ্ধান্ত ইসিকে দেয়া হোক: মাহবুব

সাইদ রিপন: দেশে নির্বাচন কখন হবে কিভাবে হবে এই সিদ্ধান্ত সম্পূন্ন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে দেওয়ার জন্য অভিমত দিয়েছেন খোদ এক নির্বাচন কমিশনার।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য ও গণতন্ত্রকে অবারিত করার স্বার্থে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় নির্বাচন কি পদ্ধতি কতখানি উন্মুক্ত হবে সেটা বর্তমান সরকার ঠিক করে দেয়। ভবিষ্যতে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য বিশ্বাসযোগ্য আইনানুগ ও উন্মুক্ত নির্বাচন হলে এবং সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত হলে সকল দল তাতে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। নির্বাচন ব্যবস্থার পদ্ধতি পরিবর্তন করে নির্বাচন কখন হবে কিভাবে হবে এই সিদ্ধান্ত সম্পূন্ন নির্বাচন কমিশনের কাছে হলে ভোটার উপস্থিতির জন্য আর হা-হুতাশ করতে হবে না। বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সোমবার (১৮ মার্চ) নির্বাচনে ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বিগত কয়েকদিন যাবত কয়েকজন সাংবাদিক জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সম্পর্কে আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমার নতুন কোন কিছু বলার নেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচন কেমন হয়েছে, প্রতিটি বিবেকবান মানুষের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর আছে। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যাদের স্বার্থ জড়িত তারা কখনো এর সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না বা দিবেন না। জাতীয় নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতার বদল নয়, এতে গণতন্ত্র কতটা সমুন্নত হলো তাও বিবেচনাযোগ্য।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে আমি অপরূপ নির্বাচন বলতে চাই। এর মাথাটা নির্বাচিত হচ্ছে দলীয় প্রতীকে এবং দেহটুকু নির্বাচিত হচ্ছে নির্দলীয় ভাবে। এই নির্বাচনের স্বরূপটি তাহলে কেমন দাঁড়ায়? অন্যদিকে এই নির্বাচনে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। এজন্য উপজেলা নির্বাচনের জৌলুস নেই। একতরফা নির্বাচনের কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এহেন নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রবিমুখতায় পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।
মাহবু্ব তালুকদার বলেন, আজকাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কথাটা বেশ চালু হয়েছে। আমি এর অর্থ বুঝি না। আমার মতে নির্বাচন মানেই হচ্ছে একাধিক এর মধ্যে বাছাই। তাই যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয় তা নির্বাচন হয় কি করে। ইংরেজিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনদের ইলেকটেড না বলে সিলেক্টেড বলা যেতে পারে কী? এবারের উপজেলা নির্বাচনের চারটি ধাপে শতাধিক ব্যক্তির চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছেন। পরবর্তীতে আরো ৫০ জন সম্ভবত বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন? ভাবে জনপ্রতিনিধির পদে আসীন হওয়ার রেওয়াজ গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ নয়।
তিনি অারও বলেন, কিছুদিন পূর্বে একজন মাননীয় সংসদ সদস্য- যিনি সদ্য সাবেক একজন মন্ত্রীও বটে, সংসদে বলেছেন, ‘নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তার ভাষ্যমতে প্রশ্ন থেকে যায় এই নির্বাচন মর্যাদা হারালো কবে? জাতীয় নির্বাচনের সময় না উপজেলা নির্বাচনের সময়? এ জন্য কে বা কারা দায়ী তা সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি। তবে তার এই বোধোদয় নিশ্চয়ই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রাণিত করবে। মর্যাদাহীন নির্বাচন করে কেউ খুশি খুশি হতে পারে না।
পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশিদের জন্য নিউজিল্যান্ড ভ্রমণে সতর্কতা
পরবর্তী নিবন্ধ৪২ হাজার ডলার নিহতদের পরিবারে দান করছেন ‘ডিম বালক’