বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্রের তালিকায় ‘পথের পাঁচালি’

পপুলার২৪নিউজ,রাজু আনোয়ার:

বিবিসির সর্বকালের সেরা ১০০ ছবির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালি’। তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে জাপানের আকিরা কুরোসাওয়ার ‘সেভেন সামুরাই’ ।
‘সেভেন সামুরাই’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে। এ তালিকায় ১৫ নম্বরে আছে একমাত্র বাংলা চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালি। ‘পথের পাঁচালি’ ১৯৫৫ সালের ৩ মে মুক্তি পায়।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নানা ভাষার সেরা ১০০টি চলচ্চিত্র বাছাই করলো ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। সেরা ১০০টি চলচ্চিত্র বাছাই করতে ভোট দেন ২০৯ দেশের ৪৩ জন সিনেবোদ্ধা।
বিবিসির বিদেশী ভাষার ১০০ ছবির তালিকায় আছে ২৪ দেশের ৬৭ পরিচালকের ১৯টি ভাষার কাজ। এর মধ্যে সর্বাধিক ২৭টি ছবি ফরাসি, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২টি মান্দারিন ভাষার ছবি আছে এতে। ইতালিয়ান ও জাপানিজ ছবি আছে ১১টি করে। ১০০ ছবির মধ্যে মাত্র চারটির পরিচালক নারী।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালি’ । ছবিটিতে সত্যজিতের দেখানো বাস্তববাদ ও মানবতার প্রশংসা করেন সমালোচকরা। এর মাধ্যমে সামাজিক বাস্তকতার ওপর ভিত্তি করে সমান্তরাল ছবির ধারা তৈরি হয় ভারতীয় চলচ্চিত্রে। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের রাগব্যবহার করে এর আবহ সংগীত করেন সেতার বাদক রবিশঙ্কর।
‘পথের পাঁচালি’র মাধ্যমে প্রথম ভারতীয় ছবি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করে। ১৯৫৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল পুরস্কার জেতে এটি। এছাড়া বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে পায় গোল্ডেন লরেল।
‘পথের পাঁচালি’ চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্র অপুর শৈশবকে কেন্দ্র করে বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা চিত্রায়িত করা হয়েছে। চলচ্চিত্রে শিশু চরিত্র অপু মন কাড়ে সবার।
অপু চরিত্রে অভিনয় করার জন্য সত্যজিৎ পাঁচ থেকে সাত বছরের শিশুর সন্ধ্যানে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন, কিন্তু বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আসা কোন ছেলেকেই তার পছন্দ হয়নি। সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া রায় তাঁদের বাড়ির নিকটে সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে একটি ছেলেকে লক্ষ্য করেন, অবশেষে অপুর চরিত্রে তাকেই পছন্দ করা হয়।
ছবিতে দুর্গার ভূমিকায় অভিনয় করার পূর্বে উমা দাশগুপ্ত কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। এতে অপু-দুর্গার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন কানু বন্দ্যোপাধ্যায় আর মায়ের চরিত্রে করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়। পথের পাঁচালী চলচ্চিত্র নির্মাণ হওয়ার আগেই কানু বন্দোপাধ্যায় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা ছিলেন। সত্যজিতের বন্ধু-পত্নী করুনা বন্দোপাধ্যায় ভারতীয় গণনাট্য সংঘের একজন অপেশাদার অভিনেত্রী ছিলেন। ইন্দির ঠাকুরুণের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সত্যজিৎ কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লী থেকে চুনীবালা দেবী নামক একজন পুরাতন নাট্যাভিনেত্রীকে খুঁজে বের করেন। অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেন বড়াল গ্রামের লোকজন।

 

 

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিল্পকলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘ঊর্ণাজাল’
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মেগা কনসার্ট শুক্রবার