তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে-তে আকাশে মেঘমালা ছোঁয়া একটি অত্যাধুনিক ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এই ভবনটির সামনের দিক, ছাদ এবং বারান্দাগুলোতে থাকবে ২৩ হাজার সবুজ গাছ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কেন্দ্রীয় পার্কে যতগুলি গাছ আছে এই একটি ভবনে সেই পরিমাণ গাছ থাকবে। আর ভবনটিতে ৪০টি বিলাসবহুল আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টও থাকবে।
এতে থাকা গাছগুলো বছরে ১৩০ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিবে। যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরিত হয় ২৭টি গাড়ি থেকে। ভবনটির প্রধান ডিজাইনার ভিনসেন্ট সেলাবট এই কথা বলেছেন।
ভবনটির নাম রাখা হয়েছে, তাও ঝু ইয়িন ইউয়ান টাওয়ার বা আগোরা গার্ডেন। গত জুলাই মাসের মধ্যেই ভনটির চুড়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আর সেপ্টেম্বরের শেষদিকে ভবনটি ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
ভবনটির রয়েছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬৯৪ বর্গফুটের কাঠামো, নিচ থেকে ডাবল-হেলিক্স ৯০ ডিগ্রি মোচড় যা দেখতে অনেকেটা ডিএনএ এর পেঁচানো আকৃতির।
২০ তলা বিশিষ্ট ভবনটি তাইপে শহরের জিন ই জেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে এর সর্বোচ্চ তলাটির কাজ শেষ হয়।
ডান পাশের ছবিতে ভবনটিতে গাছ লাগানোর পর তা দেখতে কেমন হবে তা তুলে ধরা হয়েছে।
এর ব্যালকনিতে থাকা গাছগুলো প্রতি বছর ১৩০ টন কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নিবে। ২০০৮ সালে তাইওয়ানের কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ছিল ২৬০ মিলিয়ন (২৬ কোটি) টন।
ভনটির হলওয়েতেও গাছ থাকবে। যেগুলোর মেঝে হবে কাচের।
প্রতিটি ইউনিটে থাকবে একটি লিভিং রুম, ডাইনিং রুম, ফ্যামিলি রুম, কিচেন, এবং ওয়াক ইন ক্লোসেট সহ একাধিক বেডরুম।
দুটি পেন্ট হাউজের প্রতিটির আয়তন ৫ হাজার ৯২০ বর্গফুট।
বাসিন্দারা ভবনটির চত্বর থেকে তাইপে-র মনোরম দৃশ্য দেখতে পাবে।
এর ভেতরে আছে সুইমিং পুলও।
একটি গ্যারেজ এবং ফিটনেস সেন্টারও থাকবে। দুটিতেই প্রাকৃতিক আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকবে।
ভবনটির বেলজিয়ান স্থপতি সেলেবট সবুজ নির্মাণের জন্য বিখ্যাত। তিনি এই ভবনটিকে মানব জাতির জন্য আরো টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি ছোট পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
সেলেবট বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের একটি শিল্প এলাকাকেও পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। যেখানে থাককে বিলাসবহুল বাড়ি, রেস্টুরেন্ট, দোকান, অফিস স্পেস এবং গ্রিন হাউজ। ব্রাসেলসের স্থানীয় সরকারের কাছে তিনি তার পরিকল্পনাটি পেশ করেছেন যা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যালোচনা করে দেখার কথা রয়েছে।
এই স্থপতি দক্ষিণ কোরিয়ায় মন্টা রে-আকৃতির একটি ফেরি টার্মিনাল তৈরির প্রকল্পেও কাজ করছেন। যা গাছে মোড়ানো থাকবে। আর তার ডিজাইন করা সৌর-এবং-বায়ু-শক্তি চালিত একটি ভবন মিশরের রাজধানী কায়রোতে নির্মিত হচ্ছে। ওই ভবনটির ছাদে কমিউনিটি গার্ডেন এবং সবুজ লিভিং ওয়াল থাকবে।
আগোর গার্ডেনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এর সব কাজ শেষ হবে।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
