গত এক দশকে আমাদের দেশে, বিশেষত শহরাঞ্চলে ওজন বৃদ্ধির সমস্যা মারাত্মকভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে হেপাটাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে বাড়ছে লিভারের অসুখও। শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত মেদ ধীরে ধীরে লিভারের কর্মক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে শরীরে উপস্থিত বিষ বা টক্সিক উপাদান যেমন বেরিয়ে যেতে পারছে না, তেমনি রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রাও বাড়তে শুরু করছে, সেই সঙ্গে হেমোস্টেসিসও ঠিক মতো না হওয়ার কারণে শরীর ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করছে।
এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচার উপায় কী? এ ক্ষেত্রে ওজন কমানোর পাশাপাশি লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। আর এই কাজে সহায়তা করতে পারে বেশ কিছু ফল। গবেষণায় দেখা গেছে এই ফলগুলি নিয়মিত খেলে লিভার খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। কী কী ফল…
১. মুসাম্বি
সাইট্রাস ফল হওয়ার কারণে প্রতিদিন যদি একটা করে মুসাম্বি লেবু খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসহ একাধিক পুষ্টিকর উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা লিভারের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তশালী করতে, হজমক্ষমতার উন্নতিতে, ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ওজন হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু কেস স্টাডি করাকালীন চিকিৎসকরা লক্ষ করেছিলেন প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে যদি এক গ্লাস করে মুসাম্বির রস খাওয়া যায় তাহলে শরীরে টক্সিনের মাত্রা চোখে পড়ার মতো কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগমুক্ত জীবনের পথ প্রশস্ত হয়।
২. লেবু
মুসাম্বির মতো লেবুও একটি সাইট্রাস ফল, যাতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বায়োফ্লেবোনাইডস। এই উপাদানগুলি লিভারকে পরিষ্কার করার পাশাপাশি শরীরের অন্দরে যাতে অক্সিডাইজ ড্যামেজ বেশি মাত্রায় না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।
৩. আপেল
কথাতেই আছে, ‘প্রতিদিন যদি একটা করে আপেল খাওয়া যায়, তাহলে কোনো দিন চিকিৎসকের মুখ দেখতে হয় না। ‘ কথাটা কোনো অংশে ভুল নয়। আসলে আপেলে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদান লিভারের অন্দরে যাতে কোনো ক্ষত সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর রাখার পাশাপাশি সার্বিকভাবে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
৪. গাজর
ক্যারোটিনয়েড নামে একটি অতি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে গাজরের শরীরে, যা দেহের ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো ফ্রি রেডিক্যাল বা টক্সিক উপাদনদের কোনো অঙ্গের ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শুধু লিভার নয়, কোনো অঙ্গেরই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
৫. কাঁচা আম
বেশ কিছু গবেষণায় দেখে গাছে শরীরকে ডিটক্সিফাই বা বিষমুক্ত করতে কাঁচা আমের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, লিভার এবং গল ব্লাডারের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও এই ফলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া
