নরেন্দ্র মোদিকে ৫৬ ইঞ্চির অন্তর্বাস পাঠিয়ে প্রতিবাদ!

ভারতীয় জওয়ানের ওপর হামলার প্রতিবাদে অভিনব কাজ করলেন এক প্রাক্তন জওয়ানের স্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে ৫৬ ইঞ্চির অন্তর্বাস পাঠিয়েই প্রতিবাদ জানালেন তিনি। সম্প্রতি সে ঘটনার সে ভিডিও ছড়িয়েছে নেটদুনিয়ায়। ঘটনা হরিয়ানার ফতেবাদের। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, প্রাক্তন সেনা ধরমবীর সিংয়ের স্ত্রী সুমন সিং এই কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ক্ষোভ জানিয়ে একটি চিঠিও লিখেছেন। সেই সঙ্গে একটি অন্তর্বাসও জমা দিয়েছেন জেলা সৈনিক বোর্ডে। সাধারণত ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতিকে সাহসিকতার পরিচয় হিসেবেই দেখা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে সে উপমা বারবারই ফিরে এসেছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু এ রকম একটা কাজে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে কি অপমান করা হলো না? উত্তরে ধরমবীরের পাল্টা প্রশ্ন, সেনারা কি প্রতিনিয়ত অপমানিত হচ্ছেন না?

তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছিলেন, সেনাদের সঙ্গে আগে যে ব্যবহার হয়েছে তা যাতে দ্বিতীয়বার না হয়, তা নিশ্চিত করবেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে যা হচ্ছে তা আগের থেকেও খারাপ। চিঠিতে তাঁর স্ত্রী সুমনও ঠিক একই কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ক্ষমতায় আসার আগে ভারতীয় জনতা পার্টির দাবি ছিল যে, এরপর কোনো পাক সেনা ভারতকে আক্রমণ করার হিম্মত দেখাবে না। কিন্তু এখন কী ঘটছে? আক্রমণ তো হচ্ছেই। উল্টে জওয়ানদের মাথা কেটে নিয়ে যাচ্ছে পাক সেনা। সুমনের চিঠির যে ভিডিও ছড়িয়েছে, তাতে তিনি কাশ্মীরের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন। যেখানে হাতে অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীদের ইট খেয়ে মুখ বুজে ফিরতে হচ্ছে জওয়ানকে। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, হেমরাজের শিরশ্ছেদের ঘটনার পর যেভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তাতে মনে হয়েছিল আর কাউকে এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে না।

প্রাক্তন জওয়ান জানাচ্ছেন সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় ক্ষুব্ধ সুমন। স্বামীকে তিনি জানিয়েছেন, মহিলারা তাঁদের সন্তান, ভাই বা স্বামীকে সীমান্তে পাঠাচ্ছেন মাতৃভূমি রক্ষার জন্য। তাঁদের মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য নয়। যে প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের আগে দেওয়া ছিল, তা এখন কোথায়? কোথায় ৫৬ ইঞ্চি ছাতির সাহসিকতা? জওয়ান নিগ্রহের প্রতিবাদেই তাই অন্তর্বাস পাঠিয়েছেন সুমন। তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সেনাকে নিয়মের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত করুন প্রধানমন্ত্রী। মুক্তহস্ত হলেই সেনা এর সমুচিত জবাব দেবে বলেও দাবি তাঁর।

১৯৯১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ভারতীয় সেনায় কাজ করেছেন সুমনের স্বামী ধরমবীর। অংশ নিয়েছেন একাধিক অপারেশনে। রাষ্ট্রপতি মেডেলও পেয়েছেন। অবসর গ্রহণের পর বেশ কিছুদিন আপের পর্যবেক্ষক হিসেবেও কাজ করেন তিনি। যদিও এখন সে পদেও আর তিনি নেই। প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ থাকলেও সন্তানকে সেনায় নিয়োগের কথাই ভাবছে এই দম্পতি।