পপুলার২৪নিউজ ডেস্ক:
হারপিস এক ধরনের চর্মরোগ। এটি ডিএনএ ভাইরাস যা প্রধানত লালা এবং শরীরের অন্যান্য নিঃসৃত রসের মাধ্যমে দেহে সঞ্চালিত হয়ে সংক্রমণ সৃষ্টি করে। অনেক সময় বাবা-মায়ের এ রোগ থাকলে শিশুকে আদর করে চুমুর মাধ্যমেও এ রাগ ছড়ায়।
হারপিক সিমপ্লেক্স ভাইরাস দ্বারা প্রথমে মাড়ি ও ঠোঁটে প্রদাহ দেখা দিতে পারে, যা জিনজাইভো স্টোমাইটিস নামে পরিচিত। এতে মুখের ভিতরে জিহ্বা ও ঠোটে দাঁতের বাড়িতে এক ধরণের ঘায়ের মতো হয়। এ রোগে আক্রান্ত শতকরা ৩০ ভাগ রোগী পরে বারবার সংক্রমণের শিকার হন।
হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমন : হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ বা ওরাল হারপিস ও হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ বা জেনিটাল হারপিস।
হারপিস ভাইরাস টাইপ-১ মুখ ও ঠোঁটের পাশে ক্ষত সৃষ্টি করে যা জ্বরঠোসা বা কোল্ড সোর নামে পরিচিত। এর দ্বারা প্রাথমিক সংক্রমণের ফলে মাড়ি ও ঠোঁটের প্রদাহ দেখা দিতে পারে যা জিনজাইভো স্টোমাটাইটিস নামে পরিচিত।
হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের বারবার সংক্রমণের কারণে ঠোঁটে ফুসকুড়ি হতে পারে যা চিলাইটিস নামে পরিচিত। এ ফুসকুড়ি জ্বরঠোসা নামেই পরিচিত।
হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ এর লক্ষণ : ছোট ব্যথাযুক্ত ব্লিস্টার বা জ্বরঠোসা যার মধ্যে রস বিদ্যমান যা ঠোঁটে এবং মুখের কোণায় থাকে, মুখের অভ্যন্তরে বা জিহ্বার জ্বালাপোড়া, মুখে লালা, হালকা জ্বর, গলায় ক্ষত, ঘাড়ের লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া এবং অরুচি হওয়া।
হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ এর লক্ষণ : লাল রং-এর ব্লিস্টার যৌনাঙ্গ, উরু এবং নারীদের ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গের ভেতরেও থাকতে পারে, ব্যথা হতে পারে, জ্বর, মাথাব্যথা ও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হবে।
শিশুদের মধ্যে হারপিস ভাইরাস বিভিন্ন কারণে ছড়ায় যেমন : চুমুর মাধ্যমে, একই পাত্রে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে।
আর বড়দের দাঁড়ি কামানোর সময় রেজারের মাধ্যমে যদি আক্রান্ত রেজারটি কেউ পূর্বে ব্যবহার করে থাকেন তাহলে ছড়ায়। এছাড়া হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ওরাল সেক্স করলেও এটা ছড়ায়।
হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ ও জেনিটাল হারপিস সৃষ্টি করতে পারে তবে বেশি ভাগ ক্ষেত্রে এটা ছড়ায় হারপিস ভাইরাস টাইপ-২ দ্বারা।
চিকিৎসা : হারপিস ভাইরাসের ব্যথা নিরাময়ের প্রাথমিক অবস্থায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দেয়া যেতে পারে। এসময় শিশুকে প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার দিতে হবে।
এছাড় হারপিস ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কোনো আলসার বা ঘা ভালো না হলে বা বারবার দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এই অসুখে চোখের সমস্যা হলে চোখ খারাপও হয়ে যেতে পারে। যদি নাকের ডগায় কোনো ফোসকা বা ফুসকুড়ি দেখেন, তবে বুঝবেন এর পর সংক্রমণ চোখে হবে। তখনই চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে।
