প্রয়ান দিবসে বাকশিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাসকে স্মরণ

রাজু আনোয়ার:
আবৃত্তি,গান আর আলোচনার মধ্যে দিয়ে স্মরণ করা হলো বাকশিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাস এর বিশতম প্রয়াণ দিবস। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাহিত্যের বাচিক চর্চা ও প্রসার প্রতিষ্ঠান কণ্ঠশীলন।
স্মরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় নরেন বিশ্বাসের স্বকণ্ঠে ধারণকৃত আবৃত্তি দিয়ে ।এরপর ‘তুমি রবে নিরবে’ শীর্ষক গানটি নরেন বিশ্বাসকে নিবেদন করে পরিবেশন করেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পী বুলবুল ইসলাম।
কণ্ঠশীলন অধ্যক্ষ মীর বরকতের স্বাগত বক্তব্যের পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন তাঁর ছাত্র ও সহকর্মী (বর্তমানে) শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিক উল্লাহ খান।
অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের আজীবন বাংলা ভাষা নিয়ে কাজ করার যে পরিক্রমা তা বর্ণনা করে তিনি বলেন, বাংলা ভাষার প্রমিত উচ্চারিত রূপের জন্য তাঁর আত্মত্যাগ, নিরলস কর্ম পরিচালনা, সকলকিছু ভুলে গিয়ে শুধু ভাষা নিয়েই ছিল তাঁর নিবিড় গবেষণা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস,প্রতি শুক্রবারের কণ্ঠশীলনের ক্লাস, বিভিন্ন আবৃত্তি ও নাটকের দলের ক্লাস-এ তার কোনো বিরতি ছিলো না।একসময় তিনি চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেন। প্রায় অন্ধ চোখে অন্যের হাত ধরে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলে যেতেন উচ্চারণের ক্লাস নিতে।
রফিক উল্লাহ খান বলেন, দেশে আর কোন উচ্চারণ বিশারদ ছিল না? কাঠ-কাঠ ক্লাসটিকে মধুর করে শিক্ষার্থীর হৃদয় পর্যন্ত নেয়ার কাজটি হয়ত অনেকে করতে পারতেন না।সেটি পারতেন কেবল নরেন বিশ্বাস। তাঁর ক্লাসে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা এবং আনন্দ দুটোই গ্রহণ করতেন। এত সহজ-সরল-নির্মল নির্মাণের উচ্চারণ বিধান মুখে মুখে ফোটাতে আর কে পারে? সব প্রশ্ন উল্টোবাণে নিস্তব্ধ নিথর হয়ে পড়ে যখন নরেন বিশ্বাস তাঁর ঐশ্বর্যময় স্বরের দ্বার খুলতে আরম্ভ করতেন এক এক করে। এই বিস্ময়কর সৃষ্টির ফল এই সমাজ এখন বহন করছে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাষ্ট্রিক সুরুচি প্রকাশের মাধ্যম এই ভাষাটির প্রকাশ আজ আন্তরিক ও প্রেমময় হয়েছে যাদের কারনে, তাঁদেরই অন্যতম প্রধান অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস।
শিরিন ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কণ্ঠশীলন সভাপতি, প্রশিক্ষক, নির্দেশক, আবৃত্তিশিল্পী গোলাম সারোয়ার।
আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে দেশের প্রতিথযশা আবৃত্তিশিল্পীরা একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন, অধ্যাপক কাজী মদিনা, আশরাফুল আলম, ডালিয়া আহমেদ, শিমুল মুস্তাফা, বেলায়েত হোসেন, মো. আহকাম উল্লাহ,ইকবাল খোরশেদ, রফিকুল ইসলাম, রেজীনা ওয়ালী লীনা, ড. শাহাদৎ হোসেন নিপু, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল,মাসুদুজ্জামান, তামান্না তিথি, অলোক বসু, ফয়জুল আলম পাপ্পু, আহসান উল্লাহ তমাল, ফয়জুল্লাহ সাঈদ, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি, মাসুম আজিজুল বাশার, সুপ্রভা সেবতি প্রমুখ।

 

পূর্ববর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগে মনোনয়ন ফারুক খান পাওয়ায় খান্দারপাড়ায় আনন্দ মিছিল
পরবর্তী নিবন্ধসোনালী ব্যাংকের এই বছর রেকর্ড পরিমান খেলাপি ঋণ আদায় হবে: এমডি