গার্মেন্ট কর্মীকে ধর্ষণের দায়ে যুবক গ্রেপ্তার

রাজধানীর কদমতলীতে এক কিশোরী গার্মেন্টকর্মী ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে(ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিযুক্ত সোহেলই কিশোরীকে তার নিজ বাসায় আশ্রয় দিয়েছিল। পরে তাকে গার্মেন্টে চাকুরি দেয়। এরপর মেয়েটির অসহায় অবস্থার সুযোগ নেয় সে।

কদমতলী থানার এসআই বিনয় কুমার বলেন, সোহেলের স্ত্রী ১৭ বছরের মেয়েটিকে কুমিল্লার মুরাদনগর থেকে ঢাকায় এনে সোহেলের সহায়তায় চাকরি দেয়। স্ত্রীর অবর্তমানে সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে ঘটনাটা কাউকে না জনাতে হত্যার হুমকি দেয় কিশোরীকে। ভয়ে কিশোরী চুপচাপ ছিল।

একপর্যায়ে গত সোমবার কিশোরী একজন পরিচিত ব্যক্তির সহায়তায় কদমতলী থানায় গিয়ে অভিযোগ করে। সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার সোহেলকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে ওই কিশোরী উল্লেখ করেছেন, কদমতলীর মদিনাবাগের একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় মো. সোহেল (৩৫) নামে এক ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে ভিকটিম ভাড়া থাকতো। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকায়। সোহেলের শ্বশুরবাড়ি মুরাদনগর। ভিকটিম মেয়েটি স্বামী পরিত্যক্ত। সে মুরাদনগরে তার মায়ের সঙ্গেই থাকতো।

সোহেলের স্ত্রী ঢাকা থেকে বাড়িতে গেলে ভিকটিমের মা তাকে পোশাক কারখানায় কাজ দিতে অনুরোধ করে। এরপর ২৭ মার্চ সোহেলের স্ত্রীর সঙ্গে ওই মেয়েটি ঢাকায় আসে। দুই রুমের বাসায় সোহেল তার পরিবার নিয়ে একটিতে থাকে, অপর রুমে ওই মেয়েকে থাকতে দেয়। ২ মে মিরাজনগরের একটি বোতামের দোকানে তাকে কাজে ঢুকিয়ে দেয় সোহেলের স্ত্রী। সেখানেই কাজ করতে থাকে সে।

এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়, স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়াতে সোহেল কিছুদিন ধরে কুমিল্লাতে ছিল। দুই সন্তান নিয়ে সোহেলের স্ত্রী একাই ওই মেয়েটিকে নিয়ে বাসায় থাকতো। ১১ মে সোহেলের স্ত্রী ভিকটিম মেয়েটিকে বাসায় রেখে কুমিল্লাতে চলে যায়। ১৩ মে রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ কেউ দরজা নক করে।

দরজা খুলে ভিকটিম দেখতে পায়, সোহেল। এ সময় মেয়েটি তাকে এতরাতে বাসায় আসার কারণ জানতে চায়। সোহেলের স্ত্রী বাসায় নাই, তাও জানায়। এ সময় সোহেল তাকে বলে, বিশেষ একটি কাজে ঢাকায় আসছি। রাতে থেকেই চলে যাবো। সে রাতেই বাড়িতে একা থাকার সুযোগ নিয়ে তরুণীটিকে দুই দফায় ধর্ষণ করে সোহেল।

এজাহারে ভিকটিম মেয়েটি আরও অভিযোগ করেন, এই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য সোহেল তাকে হুমকি দেয়। জানালে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার কথাও বলে। পরদিন ১৪ মে বাড়ির মালিক টুকু মৃধা বাসায় আসলে মেয়েটি তাকে বিষয়টি জানায়। এরপর মেয়েটি তার মাকেও পুরো ঘটনাটি জানায়। এই ঘটনা শুনে মেয়েটির মা ঢাকায় চলে আসেন। ১৫ তারিখ মেয়েটি তার স্বজনদের নিয়ে কদমতলী থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।