আহমেদ জিয়া, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর পলাশে পারভীন আক্তার নামে ঋণগ্রস্ত এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঋণ গ্রহনের জামিনদার হতে গিয়ে উল্টো সাজানো মামলার আসামি হয়েছেন নুরুল ইসলাম নামে এক গৃহশিক্ষক। অভিযুক্ত পারভীন উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার গড়পাড়া মহল্লার প্রবাসী রহমত উল্লার স্ত্রী। প্রতারনার স্বীকার ওই শিক্ষক একই পৌর এলাকার বালুচর পাড়া মহল্লার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী গৃহশিক্ষক নুরুল ইসলামের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রইভেট পড়াই। দুই বছর ধরে পারভীন আক্তারের স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়েকে তাদের বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে আসছি। এ সুবাদে পারভীন আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সাথে তার সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহশিক্ষক জানান, পারভীনের স্বামী রহমত উল্লাহ্ বিদেশ যাওয়ার সময় এনজিও থেকে অনেক টাকা ঋণ নিয়েছে। বিদেশ গিয়ে পারভীনের স্বামী ঠিকমত টাকা পাঠাতে না পারায় ঋণের চাপে পড়েন পারভীন। এমনকি মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালাতে গিয়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। ওই সময় প্রায় সাত মাসের প্রাইভেট পড়ানোর টাকাও আমাকে দিতে পারছিল না পারভীন আক্তার।
গত বছরের ১৪ মার্চ পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী নামক একটি এনজিওর পলাশ শাখা থেকে ২ লাখ টাকা ঋন নেন পারভীন আক্তার। ঋন গ্রহনের সময় গৃহশিক্ষক হিসেবে আমাকে অনেক অনুরোধ করে জামিনদার বানানো হয়। এসময় নুরুল ইসলাম জামিনদার হিসেবে জনতা ব্যাংকের একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক জামানত হিসেবে ওই এনজিও কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেই। মানবিক দিক বিবেচনা করে জামিনদার হওয়ার পর এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধও করেন পারভীন।
এরইমধ্যে আমি চাকরি পেয়ে প্রাইভেট পড়ানো বাদ দিয়ে আমার কর্মস্থল খুলনায় চলে যাই। গত ৬ ফেব্রুয়ারি পারভীন আক্তার আমাকে না জানিয়ে ঋণদাতা এনজিওর কাছ থেকে আমার স্বাক্ষরিত ব্ল্যাঙ্ক চেকটি তুলে নেয়। পরে ওই ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়ে ৬ লাখ টাকা লিখে জনতা ব্যাংক থেকে চেকটি ডিজঅনার করানো হয়। কোন প্রকার লিগ্যাল নোটিস না দিয়ে পারভীন আক্তার চলতি মাসের ১১ জুলাই আমার বিরুদ্ধে নরসিংদী আদালতে একটি মামলা করেন।
মামলার বিবরনে উল্লেখ করা হয় পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী এনজিও থেকে ৬ লাখ টাকা ঋন নিয়ে তা পরিশোধ করছেন না নুরুল ইসলাম। পারভীন আক্তার এনজিওটির একজন সদস্য হওয়ার সুবাদে ঘোড়াশাল শাখার ব্যবস্থাপক নুরুজ্জামানের অনুমতিপত্রের ক্ষমতা বলে ওই মামলাটি করেছেন। নুরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমি বিস্মিত হয়েছি। জামিনদার হয়ে উপকার করতে গিয়ে ঋণ না নিয়েও মামলার আসামি হয়েছি।
এ বিযয়ে পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী ঘোড়াশাল শাখার ব্যবস্থাপক নুরুজ্জামান জানান, ২০১৮ সালে নুরুল ইসলামের জামিননামায় ও জনতা ব্যাংকের একটি খালি চেক পেয়ে পারভীন আক্তারকে ২ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। ওই ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর গত ৬ ফেব্রুয়ারি পারভীন আক্তার ঐ চেকটি নিয়ে গেছেন। কিন্তু ঐ চেক নিয়ে তিনি যে নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আমাদের এনজিওর নাম ভাঙ্গিয়ে মামলা করবেন তা আমরা জানি না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের পল্লী মঙ্গল কর্মসূচীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পারভীন আক্তারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন রান্নার কাজে ব্যস্ত আছি। এসব বিষয়ে পরে সরাসরি কথা বলবো, ফোনে বলা সম্ভব নয়।
