নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা ভাইরাস মহামারির এই সংকট কাটিয়ে সুদিন ফিরে আসা না পর্যন্ত অতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র ছাড়া অন্য ব্যয় স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনায় বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়ে সরকার কতটুকু অর্থের যোগান দিতে পারবে সে হিসাব করে চলার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুবই প্রয়োজনীয় ছাড়া অন্য ব্যয়গুলো আমরা আপাতত স্থগিত রাখবো। যদি সুদিন আসে তখন আমরা করবো।
সোমবার (সেপ্টেম্বর ৭) সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব) এ বক্তব্য দেওয়ার সময় এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাসদর, নৌবাহিনী সদর দপ্তর ও বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব)- এ অংশ (ভার্চ্যুয়াল) নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে যতটুকু সহযোগিতা দেওয়া যায় আমরা সেটা করে যাচ্ছি। যার জন্য বাজেটে কিন্তু আমরা টাকা-পয়সা কম দেইনি। কিন্তু ব্যয় করার সময় সবাইকে একটু সীমিতভাবে ব্যয় করতে হবে। এ কারণে বাজেটে আমরা বরাদ্দ ধরে রেখেছি। কিন্তু এই অর্থনৈতিক অবস্থায় কতটুকু অর্থ আমরা সংগ্রহ করতে পারবো আর কতটুকু ব্যয় করতে পারবো সেখানে আমাদের এখন থেকে হিসাব করে চলতে হবে।
‘সেই অনুরোধটা আমি সবাইকে করবো, আমার সশস্ত্র বাহিনী- তিন বাহিনীকেও আমি বলবো। টাকার যোগানটা আমরা কতটুকু দিতে পারবো সেটাও একটা বিষয়। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা থাকা সত্ত্বেও আমাদের বাজেট দিয়েছি। খুব স্বাভাবিকভাবে আমরা যে বাজেট দেই সেভাবে আমরা কিন্তু বাজেটটা দিয়েছি। বাজেটটা দিয়ে লক্ষ্য আমরা স্থির রেখেছি। এর ভেতরে যতটুকু আমরা অর্জন করতে পারি।
‘যদি সারা বিশ্বব্যাপী মন্দা চলতেই থাকে বা খারাপ হয় তাহলে হয়তো পারবো না। কিন্তু পারবো না বলে আমি পিছিয়ে যেতে রাজি নই। ’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমাদের আয়োজন থাকবে, প্রস্তুতি থাকবে এবং যতটুকু পারি আমরা করবো- এটাই আমাদের লক্ষ্য। মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করবো। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আমরা ৮ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করবো এটা আমাদের লক্ষ্য ছিল। এপ্রিল মাস পর্যন্ত আমরা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অর্জনও করেছি। কিন্তু করোনার ধাক্কায় সেটা ৫ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। তারপরও আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রিজার্ভ বাড়ানোর কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে মনে করেছে রিজার্ভ আমরা ধরে রাখতে পারবো না। আল্লাহর রহমতে রিজার্ভ আমাদের বেড়েছে। ৩৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার আমাদের এখন রিজার্ভ। আমাদের রেমিট্যান্সও আসছে। সেখানে আমরা প্রণোদনা দিয়েছি।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার যথাযথভাবে কাজ করছে
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ করোনার জন্য সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে। খাদ্যসংকট দেখা দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা কতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছি কারণ আমরা শুরু থেকে খুব সজাগ ছিলাম। যাইহোক আমাদের দেশের খাদ্যের অভাব যেন না হয়।
‘কৃষিকাজ ও কৃষিতে ভুর্তকি দেওয়া, সব রকম সহযোগিতা করা এবং খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা নেই। এই একটা দিক থেকে আমরা নিশ্চিন্ত আছি যে আমাদের খাদ্যে কোনো সংকট হবে না। আল্লাহর রহমতে। সেই সংকট আমরা হতে দেবো না। ’
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কথায় বলে পেটে খেলে পিঠে সয়। সেই খাদ্য নিরাপত্তাটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন সচল থাকে তার জন্য আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি।
প্রতিটি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলাতে দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে বা কোনো জলাভূমি যেন পড়ে না থাকে।
