আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনা অধীনে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তিনি এ দাবি করেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, শেখ হাসিনা অধীনে নয়। ওই নির্বাচন হবে সন্ত্রাসমুক্ত, ভয়মুক্ত; অবাধে ভোটাররা কেন্দ্রে যাবে। আতংকে ভোটাররা বাড়িতে থাকবে, সেই নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, ওই নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য যে সংগ্রাম ও আন্দোলন দরকার, সেই প্রস্তুতি বিএনপি গ্রহণ করবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে ও মানুষের মুক্তির স্বার্থে, ওই বাকশালের গুহা থেকে গণতন্ত্রকে অবমুক্ত করার জন্য বিএনপির শেষ বিন্দু রক্ত দিয়ে লড়াই করে তাকে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই সরকার চাচ্ছে ভুতের মতো একজন ব্যক্তিকে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করেই আবার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা। এজন্যই সকল পদক্ষেপ তারা নিয়েছেন। বহু তামাশা ও বহু প্রক্রিয়া করে তারা নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশন করেছে।
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে কানাডার আদালতের রায়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কানাডার একটি আদালত রায় দিয়েছেন কিন্তু বিশ্বব্যাংক তাদের অভিযোগ থেকে সরে আসেননি। তারা তাদের অবস্থানেই আছে। আর ক্ষমতাসীনরা যেন ওই রায়ে তুলসি পাতা হয়ে গেছেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, অভিযোগটা তখন উঠেছিল কেন? অত্যন্ত নির্ভেজাল অভিযোগ-প্রাকাশ্যে মন্ত্রীর (তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন) নিজস্ব কনট্রাক্টরি ফার্মের প্যাডে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেটা তো আর মিথ্যা নয়।
তিনি দাবি করেন, দুর্নীতি, চুরি, জালিয়াতির অনেক নিদর্শন আওয়ামী লীগ সরকার স্থাপন করেছেন, সেটি আর কেউ করেনি। মুক্তিযোদ্ধার জাল সার্টিফিকেট করে সচিব-বিচারক হওয়া, হলমার্ক দুর্নীতি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও পুঁজিবাজারের অর্থ কেলেংকারির ঘটনার সঙ্গে ক্ষমতাসীনরা জড়িত।
রিজভী আহমেদ বলেন, তারপরও তারা যেন ধোয়া তুলসি পাতা। তারা বিশাল সার্টিফিকেট পেয়ে গেছেন কানাডার আদালত থেকে। অথচ তারা কানাডাতে বেগমগঞ্জ বানিয়েছেন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা ও তাদের স্ত্রীরা সেখানে সম্পদ করেছেন, একটি এলাকায় বাড়ি-ঘর করেছেন। ওই এলাকার নামই দেয়া হয়েছে বেগমগঞ্জ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গুরুতর অসুস্থ কাজী আসাদ ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরের আশু আরোগ্য কামনায় ‘জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ নামের একটি সংগঠন এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এতে ওই দুই নেতার আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত হয়।
দোয়া মাহফিলে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান আলিম, হাফেজ আবদুল মালেক প্রমুখ।
