মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে ১০ বছর আগে এক মোটরসাইকেল চালককে হত্যার দায়ে তিন ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বরিশালের গৌরনদী উপজেলার রামনগর এলাকার সেন্টু শরীফ (৩৫), একই উপজেলার কমলাপুর এলাকার মিরাজ ফকির (৩০) এবং মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার ফজেল শেখ (৫০)।
মামলার বরাত দিয়ে পিপি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গৌরনদী উপজেলার বড় দুলালী এলাকার মোকসেদ ঘরামীর সেজো ছেলে শাহাদাত ঘরামী (২০) ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার বার্থী এলাকায় যাওয়ার কথা বলে শাহাদাতকে ভাড়ায় নেন প্রতিবেশি মিরাজ ও সেন্টু। পরে তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সেদিন রাতে কোনো এক সময় শাহাদাতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
পরে মরদেহটি তাদের আত্মীয় ফজেল শেখের সাহায্যে মাদারীপুরের মস্তফাপুর ইউনিয়নের সিকি-নওহাটা এলাকার একটি জমিতে ফেলে চলে যান।
এ ঘটনায় দুদিন পর নিহতের বাবা মোকসেদ ঘরামী বাদী হয়ে মিরাজ ফকির ও সেন্টু শরীফসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
আইনজীবী বলেন, এরপর আসামি মিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন। তিনি জামিনে বের হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সদর থানার পুলিশের এসআই শ্যামলেন্দু ঘোষ তদন্ত শেষে তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার আদালত এ রায় দেয়।
রায়ে আদালত তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।
মামলার বাদী শাহাদাত ঘরামীর বাবা বলেন, “আমার ছেলে একজনের কাছ থেকে প্রতিদিন আড়াইশ টাকা ভাড়া দেওয়ার চুক্তিতে মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে পরিবারের হাল ধরেছিল। সেন্টু, মিরাজ আর ফজেল মোটরসাইকেলটি লুট করে ধরা পড়ার ভয়ে আমার ছেলেকে খুন করে।”
তিনি আরও বলেন, “ছেলের খুনিদের ফাঁসির রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে এই রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।”