পপুলার২৪নিউজ,জেলা প্রতিনিধি:
মাথার মধ্যে পোকায় বাসা বাধায় হাচির সাথে নাক দিয়ে বেড়িয়ে আসছে জীবন্ত পোকা। বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের হনুফা বেগমের কয়েকদিনে হাচির সাথে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি জীবন্ত পোকা বের হয়েছে। এখন তার চোখ থেকে অনবরত পানি ঝড়ছে। অসুস্থ হনুফা বরিশাল নগরীর ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডের রয়েল সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হনুফা ম্যাগোট ইন দ্যা নোজ এন্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. খান আব্দুর রউফ। হনুফা বেগম জানান, গত কিছু দিন ধরে মাথায় ব্যথা অনুভব করেন এবং চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে। মাথা ব্যথার জন্য দোকান থেকে ওষুধ খেতেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তে শুরু করলে মাথা ব্যথা বেড়ে যায়। এসময় তিনি চিকিৎসার জন্য গৌরনদী উপজেলায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হন।
২৩ ফেব্রুয়ারি নাক দিয়ে রক্ত ঝড়া বেড়ে গেলে ওইদিনই বরিশাল নগরীর রয়েল সিটি হাসপাতালে ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. খান আব্দুর রউফের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, অসুস্থ হনুফার নাকের মধ্যে এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করেন চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ। এরপর হাঁচি দেয়ার সাথে সাথে হনুফার নাক দিয়ে অন্তত ২০টি জীবন্ত লাদা পোকা বের হয়ে আসে। গত সোমবারও তার হাচির সাথে ১০-১৫টি পোকা বের হলে তার মাথা ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. খান আব্দুর রউফ জানান, এই রোগের নাম ‘ম্যাগোট ইন দ্যা নোজ এন্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস’। তিনি বলেন, নাক, চোখ এবং কপালের ভিতরের একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। কোনভাবে পোকা সেখানে প্রবেশ করতে পারলে তারা বাসা বাঁধে ও ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা হয়। হনুফাকে পরীক্ষা-নীরিক্ষায় করে দেখা গেছে তার ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হনুফার মাথার মধ্যে পোকাটি বাসা বাঁধলেও তিনি বুঝতে পারেননি। যার কারণে মাথা ব্যথা এবং চোখ তার পানি ঝড়ছে। তাকে সিটিস্ক্যান করে পোকার বাসাটি নির্ণয় করে ওষুধের মাধ্যমে ধ্বংস করা হবে। এতে হনুফা সুস্থ হয়ে উঠেবেন।
তিনি আরো বলেন, হনুফার মাথার ভেতর কীভাবে পোকা ঢুকেছে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। তবে ধারণা করা হচ্ছে হনুফা যেহেতু কৃষি কাজ করেন, তাই কৃষি কাজের ফাঁকে কোন গাছের নীচে ঘুমিয়ে পড়লে অচেতন অবস্থায় তার নাক কিংবা কান দিয়ে পোকা প্রবেশ করে খালি স্থানে বাসা বেঁধেছে। এ ধরনের সম্যসা এড়াতে সবাইকে কোন গাছের নীচে না ঘুমানো পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
